জীবন কাহেনি-গ্যালিলিও গ্যালিলি

জীবন কাহেনি-গ্যালিলিও গ্যালিলি (জন্ম : ১৫৬৪ খ্রি., মৃত্যু : ১৬৪২ খ্রি.): গ্যালিলিও গ্যালিলি লাতিন ভাষায় ফাদার মন্ত্রউচ্চারণ করছেন। কিন্তু সুরটা বিশেষ ভাবে আকৃষ্ট করছে তাঁকে। আজ বাদে কাল মহামানব যীশুর জন্মদিন। আজ শুরু হয়েছে ক্যারল সংগীত। একটুবাদে রাত বারোটায় একটি একটি করে হাজার খানা প্রদীপ জ্বলে উঠবে। আকাশে শুরু হবে আতশবাজির খেলা। আর তখনই সান্তাক্লজ বের হবেন উপহারের মোজা কাঁধে নিয়ে। এমনটি দেখে আসছেন

জীবন কাহেনি-গ্যালিলিও গ্যালিলি (জন্ম : ১৫৬৪ খ্রি., মৃত্যু : ১৬৪২ খ্রি.):

গ্যালিলিও গ্যালিলি লাতিন ভাষায় ফাদার মন্ত্রউচ্চারণ করছেন। কিন্তু সুরটা বিশেষ ভাবে আকৃষ্ট করছে তাঁকে। আজ বাদে কাল মহামানব যীশুর জন্মদিন। আজ শুরু হয়েছে ক্যারল সংগীত। একটুবাদে রাত বারোটায় একটি একটি করে হাজার খানা প্রদীপ জ্বলে উঠবে। আকাশে শুরু হবে আতশবাজির খেলা। আর তখনই সান্তাক্লজ বের হবেন উপহারের মোজা কাঁধে নিয়ে। এমনটি দেখে আসছেন গ্যালিলিও, সেই ছোটবেলা থেকে। দেখে এসছেন আর ভাবছেন এই ধার্মিক অনুশাসনের অন্তরালে কি যুক্তি আছে? আছে কি এমন কিছু, যাকে আমরা বিজ্ঞান বলতে পারি? নাকি এ হল নিছকই আমাদের আজন্মলালিত একমাত্র বিশ্বাস।
ছটফট করতে থাকেন তিনি- পাঁচ বছরের গ্যালিলিও গ্যালিলি। ভালো লাগে না, ভালো লাগেনা ধর্মের নামে অধর্মের এই উদ্ধত অহংকার। ধর্মের আফিম খাইয়ে মানুষকে ঝিমিয়ে রাখা, শোষনের ধারাবাহিকতা। সত্য কি? সত্য কোথায়? সত্যকে কিভাবে উপলব্ধি করব?
সত্যের সন্ধানে পাঁচ বছরের বালক গ্যালিলিও উদ্ভ্রান্তের মতো ছুটে বেড়াচ্ছে। চিরাচরিত ধ্যানধারণার গোলক ধাঁধায়। সাদামাটা ভাবনা নিয়ে পরিচিত প্রিয়জনেরা সামনে এসে দাঁড়াচ্ছেন। অবাক বিস্ময়ে তাঁরা তাকিয়ে থাকছেন এই অবাক বালকের মুখের দিকে। আহা, ঠোঁট দুটো শুকনো ! একমাথা উস্কোখুস্কো চুল ! হ্যাঁরে, কি হয়েছে তোর? মা মেরেছে বুঝি? বাবার সঙ্গে মনোমালিন্য? যেমনটি হয়ে থাকে আর কি !
ওঁরা ভাবতেও পারেননি, এমন কোনো ঘটনা গ্যালিলিওকে ঘরছাড়া করেনি, ঘর ছাড়া করেছে তার নিজস্ব তাগিদ।
তাঁর মনের ভেতর উথলে উঠেছে প্রশ্নের উতরোল। তাঁকে যে জানতেই হবে সৃষ্টিরহস্যের শেষ কথা ! তার আগে যদি আমার জীবন ফুরিয়ে যায় তাহলে কি হবে !
গ্যালিলিও  পৃথিবীর আলো দেখেছিলেন ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দে। জন্মেছিলেন ইতালির পিসা শহরে। বাবা ছিলেন এক বিখ্যাত সংগীতশিল্পী।
ছোট্ট বয়স থেকেই গ্যালিলিও নানা বিষয়ে অনুসন্ধিৎসা জাগিয়ে তুলেছিলেন। চারপাশের সবকিছুকে ভালোভাবে দেখতে হবে, এমন একটা অসীম কৌতহল ছিল তার মনের মধ্যে। অজানাকে জানতে হবে তবেই মানব জীবনের সার্থকতা - মনে প্রাণে তাই বিশ্বাস করতেন তিনি। দিন কাটতে থাকে। শৈশবকাল একসময় হারিয়ে যায়। একঝাঁক রোমাঞ্চ আর রহস্য নিয়ে এসে দাঁড়ায় কিশোরবেলা। কিশোরবেলাতে গ্যালিলিও হাতে - কলমে পরীক্ষা - নিরীক্ষার কাজ শুরু করেছিলেন। নানা ধরনের বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির মডেল তৈরিতে তিনি ছিলেন খুবই ওস্তাদ। যেটা দেখতেন চট করে সেটারই একটা প্রতিরুপ বানিয়ে ফেলতে পারতেন। এইভাবে তিনি বন্ধুবান্ধবদের তাকে লাগিয়ে দিতেন। আত্মীয় পরিজনরাও কিশোর গ্যালিলিওর এই ক্ষমতা দেখে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করতেন। হেডমাস্টার স্বয়ং বাড়িতে এসে বলে গিয়েছিলেন যে, একদিন গ্যালিলিও নিশ্চয়ই হবেন বিশ্বের বিস্ময়।
তার এই বাণী ভবিষ্যৎদ্বাণী পূরন হয়েছিল। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য ভদ্রলোক তখন বেঁচে ছিলেন না।
উনিশ বছর বয়সে গ্যালিলিওর জীবনে একটি মজার ঘটনা ঘটে গিয়েছিল। মজার বলব, নাকি রহস্যঘন, তা জানি না অবশ্য। এসো, সংক্ষেপে ঘটনাটি বলি। এই ঘটনাই গ্যালিলিওর পরবর্তী জীবনকে প্রভাবিত করেছিল।
চার্চের মধ্যে ঢুকেছিলেন গ্যালিলিও। বেদির কাছে শিকল দিয়ে ঝুলানো তেলের প্রদীপের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ চমকে উঠলেন তিনি। একটা অসাধারন ব্যাপার চোখে পড়ল তার। অথচ লক্ষ লক্ষ মানুষ এই ব্যাপারটি প্রতিদিন দেখেছেন। কিন্তু প্রশ্ন কেউ কখনও করেননি। অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন বলেই তিনি গ্যালিলিও, প্রশ্ন তোলেননি বলেই, অন্য লোকদের নাম আজ হারিয়ে গেছে বিস্মৃতির অতলে।
 তিনি দেখলেন, শিকলের দোলার সঙ্গে সঙ্গে বাতিটি দুলছে। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হল, একটা নির্দিষ্ট ছন্দ আছে তার দোলুনির।
ব্যাপারটা খেয়াল হতেই তিনি চমকে উঠলেন। প্রদীপের প্রতিটি দোলনের বিস্তার আগের থেকে ক্রমশ কমছে। কিন্তু প্রত্যেক বার সেই একই সময় লাগছে।
প্রশ্নের কাঁটা গেঁথে গেল গ্যালিলিওর অনুসন্ধিৎসু মনের মধ্যে। কেন এমন হচ্ছে? সময় একই লাগছে, অথচ দোলনের বিস্তার কমছে কেমন করে?
এই জিজ্ঞাসার জবাব পেতেই পরবর্তীকালে গ্যালিলিও আবিষ্কার করেছিলেন তার বিশ্ববিখ্যাত ঘড়ির পেন্ডুলামের সূত্র।
এই সূত্র ব্যবহার করে সময়ের গতি নির্ধারণ করা হয়। নিয়ন্ত্রিত হয় ঘড়ির সময়।
এবার এসো, আমরা তার ছোটবেলার পড়াশোনার কথা বলি। তার ছোটবেলায় শিক্ষার সুযোগ ছিল খুবই কম। তখনকার সমাজে বেশি লেখাপড়া করাটাকে খুব একটা সুনজরে দেখা হত না। বেচারি গ্যালিলিও এক জেসুইট মঠে গ্রিক ও লাতিন ভাষা শিক্ষা করেন। সামান্য কিছু অংকবিদ্যাও রপ্ত হয়েছিল তার। সেগুলিকে পুঁজি করে কি আর বিজ্ঞানী হওয়া যায়? হওয়া যায় না। কিন্তু এগিয়ে এসেছিলেন বাবা। বাবা চেয়েছিলেন ছেলের এই প্রতিভাকে কাজে লাগাতে। ছোট্ট থেকেই অসাধারন মেধাসম্পন্ন ছিলেন গ্যালিলিও গ্যালিলি। পুত্রকে নিয়ে তিনি এলেন পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই বিশ্ববিদ্যালয় গ্যালিলিওর বৌদ্ধিক জীবনকে একেবারে পাল্টে দিয়েছিলেন। এখানে পড়তে পড়তেই যুক্তিনির্ভর হয়ে ওঠেন। তার মননশীলতার মধ্যে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগে। গড়ে ওঠে জীবন ও জগৎ সম্পর্কে তার নিজস্ব দৃষ্টিভংগী।
তখন থেকেই তিনি নিয়মিত বিতর্কের আসরে যোগ দিতেন। তার অকাট্য যুক্তির কাছে পরাজিত হতেন প্রতিপক্ষরা। 
অনেক সময় দেখা দিতে চরম মনোমালিন্য। তবু গ্যালিলিও কখনো তার পথ থেকে বিচ্যুত হননি। এমনই অসমসাহসী ছিলেন তিনি।
গ্যালিলিও প্রাচীন মনীষীদের চিন্তাধারাকেও সমালোচনা করতেন। এ ব্যাপারে কোনো কুন্ঠা ছিলনা তার মনের মধ্যে। তিনি যেভাবে এবং যে ভাষায় অ্যারিস্টটলকে আক্রমন করেছিলেন তা শিক্ষিত সমাজকে ব্যথিত করেছিল।
তখন গ্যালিলিওর বয়স মাত্র ১৯ বছর। তিনি বললেন 'মহাপ্রাজ্ঞ অ্যারিস্টটলের সব সিদ্ধান্তই অভ্রান্ত নয়।' অ্যারিস্টটল বলেছিলেন, কোনো উঁচু জায়গা থেকে একই সময়ে একটি ভারী বস্তু এবং একটি হালকা বস্তু ফেললে ভারী বস্তুটি হালকা বস্তুর আগে মাটিকে স্পর্শ করবে।
ওই বয়সেই গ্যালিলিও পরীক্ষার দ্বারা প্রমান করলেন যে, এই সিদ্ধান্ত ভুল। অথচ হাজার হাজার বছর ধরে আমরা এই সিদ্ধান্তকে  সত্য মেনেছি। আর মেনেছি বলেই বিজ্ঞানের ক্ষতি করেছি। এখন থেকে এমনটি আর হতে দেওয়া চলবে না। গ্যালিলিও প্রমান করেছিলেন যে, ওপর থেকে নিচে ফেলা ভারী বস্তু এবং হালকা বস্তু একই সঙ্গে নিচে পড়বে যদি না পতনকালে বায়ুমন্ডলের দ্বারা তাদের গতি বাধা পায়।
তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ে দারুন অসন্তোষ দেখা দিল। শেষ পর্যন্ত সকলে তাকে সামাজিকভাবে বয়কট করতে শুরু করেন।কেননা অ্যারিস্টটলকে অনেকে দেবতার আসনে বসিয়েছিলেন। আর তার বিরুদ্ধে কিনা এই বিদ্রোহ !
শেষ অব্দি গ্যালিলিও শক্তিশালী বিরুদ্ধ পক্ষের সামনে অসহায়, নিঃসঙ্গ হয়ে পড়লেন। পিসা ছেড়ে তাকে আসতে হল পাদুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র থাকাকালীন গণিত শাস্ত্রের প্রতি তার আগ্রহ বেড়ে গিয়েছিল। ইউক্লিড, আর্কিমিডিস প্রভৃতি গণিতবিশারদদের গবেষণা পত্রগুলি তিনি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়তেন।তখন থেকেই তার মনের ভিতর একটা ধারণার জন্ম হয়েছিল, তা হল, আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের সঙ্গে পরিচিতি অর্জন না করতে পারলে কোনো মানুষের জ্ঞান পূর্ন হবে না। তাই পদার্থবিজ্ঞানই হয়ে দাঁড়াল তার একান্ত প্রেম। চিকিৎসা শাস্ত্রে অধ্যয়ন অবশ্য বেশি দূর এগোল না। আর্থিক কারণে মাঝপথেই বন্ধ হয়ে গেল এই পড়াশোনা। কিন্তু তার নিজস্ব গবেষণা বন্ধ হল না। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি আর্কিমিডিসের সূত্রের ওপর নতুন একটি আবিষ্কার করে বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়েছিলেন। তিনি এমন একটি নিতি আবিষ্কার করেছিলেন যার দ্বারা মিশ্রিত ধাতুসমূহের মধ্যে থেকেও যেকোনো একটির পরিমান নির্নয় করা যায়।
গ্যালিলিওর পরবর্তী জীবন ছিল ঘাত-প্রতিঘাতে পরিপূর্ন। তোমরা নিশ্চয়ই জানো যে, নিজস্ব মতবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে তাকে কি ধরনের শারীরিক নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হয়েছিল। যাজকসম্প্রদায় তার প্রতি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন। তিনি রক্ষণশীল চার্চের সর্বময় ধ্যানধারণাকে আক্রমন করেছিলেন। সামাজিক কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ঘোষণা করেছিল তীব্র জেহাদ। তাই কুচক্রীরা তাকে 'বিধর্মী এবং বাইবেলবিদ্বেষী' বলে ঘোষণা করেছিলেন। জেসুইটরা তাকে চরম শাস্তি দিতে উদ্যত হয়েছিলেন।
শেষ অব্দি গ্যালিলিওর জীবন কেটেছিল নিজ গৃহে অন্তরীন অবস্থায়। তখন তার বয়স হয়েছে সত্তর বছর। সেই বন্দি অবস্থাতেও তিনি হল্যান্ড থেকে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেছিলেন।
১৫৯২ থেকে ১৬১০ সাল পর্যন্ত তিনি বিজ্ঞানের জগতে বিপ্লব এনেছিলেন। যেমন জ্যোতির্বিজ্ঞানে উন্নত, দুরবিনের প্রয়োগ, শনিগ্রহের বলয় আবিষ্কার, বৃহস্পতি গ্রহে তিনটি উপগ্রহের সন্ধান, বহুভূজ আঁকবার যন্ত্র, সেকটার উদ্ভাবন, একাধিক নক্ষত্রের সঠিক অবস্থান নির্নয়, চাঁদের ভূমি অসমতল হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা ইত্যাদি।
জীবনের শেষ কটা দিন অন্ধ হয়েগিয়েছিলেন গ্যালিলিও। দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। তখন অবশ্য গৃহবন্দিত্বের আদেশদন্ড থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন ওই প্রবীণ বিজ্ঞানী।
অন্ধ অবস্থাতেই জীবনের শেষ চারটি বছর অতিবাহিত করেন গ্যালিলিও গ্যালিলি। অবশেষে ১৬৪২ খ্রিস্টাব্দে আটাত্তর বছর বয়সে চিরনিদ্রার কোলে ঢলে পড়েন এই মহান বিজ্ঞানী। 
জীবন কাহেনি-গ্যালিলিও গ্যালিলি
গ্যালিলিও গ্যালিলি

COMMENTS

Name

ABOUT TEMPLE,3,BIOGRAPHY,22,CAREER VIDEO,1,INSPIRE STORY,1,MOTIVATION SPEECH,10,Motivational Speech,7,SITE MAP,3,STORY OF SUCCESS,15,STORY OF TEMPLE & GOD,3,VIDEO,1,youtube,1,বাংলায় মোটিভিষনের কথা,18,
ltr
item
MOTIVATIONAL-INSPIRE.COM: জীবন কাহেনি-গ্যালিলিও গ্যালিলি
জীবন কাহেনি-গ্যালিলিও গ্যালিলি
জীবন কাহেনি-গ্যালিলিও গ্যালিলি (জন্ম : ১৫৬৪ খ্রি., মৃত্যু : ১৬৪২ খ্রি.): গ্যালিলিও গ্যালিলি লাতিন ভাষায় ফাদার মন্ত্রউচ্চারণ করছেন। কিন্তু সুরটা বিশেষ ভাবে আকৃষ্ট করছে তাঁকে। আজ বাদে কাল মহামানব যীশুর জন্মদিন। আজ শুরু হয়েছে ক্যারল সংগীত। একটুবাদে রাত বারোটায় একটি একটি করে হাজার খানা প্রদীপ জ্বলে উঠবে। আকাশে শুরু হবে আতশবাজির খেলা। আর তখনই সান্তাক্লজ বের হবেন উপহারের মোজা কাঁধে নিয়ে। এমনটি দেখে আসছেন
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhS0kQEhQtIgw_16yztmEMtnyJ4iPzDi4FtqIikRZBn7A6OLimuCgc3Nq_AaWUWyDH-gsOH4EpKTcgt41_joVlv0EB2zw3QnDeaysBstObXnP8nXcgtCv6iIGQMWngs5anBnx_AK9Jx73S4/s640/gallieo.jpg
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhS0kQEhQtIgw_16yztmEMtnyJ4iPzDi4FtqIikRZBn7A6OLimuCgc3Nq_AaWUWyDH-gsOH4EpKTcgt41_joVlv0EB2zw3QnDeaysBstObXnP8nXcgtCv6iIGQMWngs5anBnx_AK9Jx73S4/s72-c/gallieo.jpg
MOTIVATIONAL-INSPIRE.COM
https://careermotivate.blogspot.com/2020/06/jibon-kaheni-gallieo.html
https://careermotivate.blogspot.com/
https://careermotivate.blogspot.com/
https://careermotivate.blogspot.com/2020/06/jibon-kaheni-gallieo.html
true
754785295974042891
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy Table of Content