ছোটদের অনুপ্রেরনা মূলক গল্প-পার্ট ১ ছোটদের নৈতিক গল্প এক চোখ নষ্ট হরিণ এক হরিণ-এর একটা চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। দেখতে না পাওয়া সেই হরিণ বিপদ-এর হাত থেকে বাঁচতে সে সমুদ্রের ধারের মাঠে ঘাস খেয়ে বেড়াত। তার ভাল চোখটি সে ফিরিয়ে রাখত ডাঙ্গার দিকে যাতে কোন শিকারী বা শিকার ধরা কুকুর এলে দূর থেকেই তাকে দেখতে পেয়ে যায়। সমুদ্রের দিক থেকে সে কোন বিপদের ভয় করত না। তাই তার নষ্ট চোখটা সে ঐ দিকে রেখে চরে বেড়াত। একদিন সমুদ্রে সেই এলাকা দিয়ে নৌকা বে
ছোটদের অনুপ্রেরনা মূলক গল্প:
এক চোখ নষ্ট হরিণ
এক হরিণ-এর একটা চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। দেখতে না পাওয়া সেই হরিণ বিপদ-এর হাত থেকে বাঁচতে সে সমুদ্রের ধারের মাঠে ঘাস খেয়ে বেড়াত। তার ভাল চোখটি সে ফিরিয়ে রাখত ডাঙ্গার দিকে যাতে কোন শিকারী বা শিকার ধরা কুকুর এলে দূর থেকেই তাকে দেখতে পেয়ে যায়। সমুদ্রের দিক থেকে সে কোন বিপদের ভয় করত না। তাই তার নষ্ট চোখটা সে ঐ দিকে রেখে চরে বেড়াত। একদিন সমুদ্রে সেই এলাকা দিয়ে নৌকা বেয়ে যাচ্ছিল কিছু লোক। তারা হরিণটাকে দেখতে পেয়ে অনায়াসে তাক করে তাকে মেরে ফেলল। মরার সময় হরিণটা বলে গেল, কি দুর্ভাগা আমি! ডাঙ্গার দিক থেকে যাতে বিপদে না পড়ি তার জন্য কত ব্যবস্থা নিলাম, এমনকি এই সাগরের ধারে চলে এলাম, ভেবেছিলাম বেঁচে গেলাম, উল্টে আরো সহজে মারা পড়লাম।
শিক্ষা-বিপদ কোন দিক থেকে কখন আসবে,তা কেউ যানে না।তাই সর্বদা সচেতন থাক।

deer
একফোঁটা মধু
একফোঁটা মধু মাটিতে পড়ে আছে! পাশ দিয়ে ছোট্র একটি পিপীলিকা যাচ্ছিল! মধুর ঘ্রাণ নাকে ঢুকতেই থমকে দাঁড়াল! ভাবলো একটু মধু খেয়ে নেই! তারপর না হয় সামনে যাবো! এক চুমুক খেলো! বাহ্! খুব মজা তো! আর একটু খেয়ে নেই! আরেক চুমুক খেলো! তারপর সামনে চলতে লাগলো! হাটতে হাটতে ঠোঁটে লেগে থাকা মধু চেটে চেটে খাচ্ছিল! ভাবলো, এত মজার মধু আরেকটু খেয়ে নিলে কি হয়? আবার পিছনে ফিরলো! পূর্বে মধুর একপাশ থেকে খেয়েছিল! এবার চিন্তা করলো ভিতরে মনে হয় আরও মজা! এবার আস্তে আস্তে বেয়ে বেয়ে মধু ফোঁটার উপরে উঠে গেল! বসে বসে আরামছে মধু খাচ্ছে! খেতে খেতে এক পর্যায়ে পেট ফুলে গেল! ঐ দিকে আস্তে আস্তে পা দুটো মধুর ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে! তখনই হঠ্যাৎ টনক নড়লো তার! কিন্তু কতক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে! মধু থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চলছে! কিন্তু নাহ্! মধুতে তার সমস্ত শরীর মাখামাখি অবস্থা! অনেক চেষ্টা করেও নিজেকে আর উদ্ধার করতে সক্ষম হলো না! নাকে মুখে মধু ঢুকে দম বন্ধ হয়ে যেতে লাগল! অবশেষে.. পিপীলিকাটি মধুর ভিতরে আটকে পড়েই মৃত্যু বরণ করল!!
শিক্ষা-বেশি লোভ করা ভাল নয়।

moumachi
কাকের বুদ্ধি
একটা কাক উড়তে উড়তে এমন এলাকায় পৌঁছাল, যেখানে পানি দুর্লভ। অথচ পিপাসার তার ছাতি ফাটার দশা। অনেক খোঁজাখুঁজি করে কাক একটা কলসি পেল। কিন্তু কলসির কাছে গিয়ে আবার হতাশ। তবু ঠোঁট বাড়িয়ে চেষ্টা করল অনেকবার। না, পানির নাগাল পেল না। চিন্তা করল কী করা যায়। কলসির আশপাশে কিছু নুড়ি-পাথর পড়ে ছিল। সেগুলো দেখতে দেখতে হঠাৎ কাকের মাথায় বুদ্ধি এল। একটা করে নুড়িপাথর নিয়ে কলসির মধ্যে ফেলল সে। পাথর জায়গা দখল করায় পানি উঠে এল কলসির মুখের কাছে। ‘আহ! কী শান্তি!’ কাকের মন খুশিতে ভরে উঠল। ঠোঁট ডুবিয়ে ডুবিয়ে পরান ভরে পানি খেয়ে তৃষ্ণা মেটাল। শিক্ষাঃ বুদ্ধি থাকলে উপায় হয়।

crow
কুড়াল
একবার এক বেকার লোক পথে একটা কুড়াল কুড়িয়ে পেল। কিন্তু কুড়ালটার বাঁট নেই। লোকটা বাগানে গিয়ে গাছের দিকে চেয়ে বলল, ‘ভাই, তোমরা কেউ আমাকে একটা ডাল দেবে?’ ‘ডাল দিয়ে তুমি কী করবে?’ এক গাছ বলল। বেকার লোকটা খানিক চিন্তা করে বলল, ‘আমার ত ঘর নেই। তাই আমি একটা ঘর বানাব।’ কুড়ালের বাঁটের কথা সে বেমালুম চেপে যায়। গাছগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিল, যেহেত লোকটার ঘর নেই, তাকে একটা ডাল দেওয়া তাদের নৈতিক দায়িত্ব। বেকার লোক একটা ডাল পেল। তাই নিয়ে বাড়ি ফিরে মজবুত করে বানাল কুড়ালের বাঁট। তারপরে কুড়ালটা ঘাড়ে করে নিয়ে বাগানে হাজির। গাছগুলোর ত চক্ষু চড়কগাছ। ‘তুমি ত খুব বেঈমান হে! আমরা তোমাকে গাছ দিলাম। সেই গাছ দিয়ে তুমি ঘর না বানিয়ে কুড়ালের বাঁট বানালে। আবার তা দিয়ে তুমি আমাদেরই ধ্বংস করতে এসেছ?’ ‘থামো! বেশি বকবক কর না!’ বেকার লোকটা সকার হয়ে উঠল। একটার পর একটা গাছ কেটে সাবাড় করল সারা বাগান। শিক্ষাঃ কাউকে কিছু দেওয়ার আগে ভাবতে হয়, নিজের পায়ে কুড়াল মারা হচ্ছে কিনা।

ax
খরগোস ও কচ্ছপ
একদা এক বনে এক খরগোশ আর কচ্ছপ পাশাপাশি বাস করত। দুই জনের মধ্যে বেশ বন্ধুত্বও ছিল। কিন্তু মাঝে মাঝে ঝগড়াঝাটি যে হতো না তা নয়। খরগোশ খুব জোরে ছোটে। যেন বাতাসের আগেই ছুটে চলে। আর কচ্ছপ? সে চলে ধীরে ধীরে হেলেদুলে। কচ্ছপের ওই হাঁটা দেখে একদিন খরগোশটি আর চুপ করে থাকতে না পেরে হেসে লুটোপুটি খাচ্ছিল, আর মুখ ফসকে বলেও ফেলল, দাদা তুমি কি হাঁটাই না শিখেছ! কচ্ছপকে এ রকম ব্যঙ্গ করতে শুনে কচ্ছপটি খরগোশকে গম্ভীর কণ্ঠে বলল, এত হাসার কি আছে? এসো প্রতিযোগিতায় নামো। তখন দেখা যাবে। কচ্ছপ বলল, এখনই। ওই যে ওই অনেক দূরে ওই নদীর ধারে একটা অশ্বত্থ গাছ দেখা যাচ্ছে, এসো দেখি ওইখানে কে আগে পৌঁছতে পারে? প্রতিযোগিতা। হো হো করে খরগোশ হাসতে হাসতে বলল, প্রতিযোগিতা! তা কার সঙ্গে? তোমার সঙ্গে- বলেই আবার হো হো করে হাসতে লাগল। আচ্ছা, তুমি যখন নিজে মুখে বলছ তবে তো রাজি হতেই হয়। তাহলে কত দূর যাওয়ার প্রতিযোগিতা হবে? আর কখন শুরু হবে? এদিকে বেলা পড়ে এলো। খরগোশের ঘুম ভাঙল এবার। সে তখন আশপাশে তাকিয়ে কচ্ছপকে দেখতে না পেয়ে নদীর তীরের সেই অশ্বত্থ গাছটার দিকে ছুটতে থাকল। সেখানে গিয়ে হাঁফাতে হাঁফাতে খরগোশ দেখল তার আগেই সেখানে কচ্ছপ পৌঁছে বিশ্রাম করছে। অতএব শুরু হয়ে গেল প্রতিযোগিতা। খরগোশ একটু দৌড়েই পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখতে পেল কচ্ছপ অনেক অনেক পেছনে পড়ে আছে। সেদিন রোদ্দুরের তেজ ছিল খুব। পাশেই একটা গাছের নিচে একটু ছায়া দেখে খরগোশ ভাবল, একটু বিশ্রাম নিলে ভালো হয়। এইখানে পৌঁছতে কচ্ছপের অনেক দেরি। একটু বিশ্রাম নেয়া যাক। হঠাৎ ফুরফুর করে হাওয়া বইতে লাগল। গাছের ছায়ায় বসে মিষ্টির ফুরফুর হাওয়ায় খরগোশের ঘুম পেয়ে গেল। খরগোশ কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল তা নিজেই জানতে পারল না। ওদিকে কচ্ছপ কিন্তু সমানে একটানা হেঁটে চলছিল। তেজি রোদ্দুর গ্রাহ্য না করে সে একটুও না থেমে হেঁটেই চলল। শিক্ষাঃ ধীর ও স্থির ব্যক্তিরাই প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করে

খরগোস ও কচ্ছপ

COMMENTS